খবরের বিস্তারিত...


ইসরাইল-ফিলিস্তিন বৈরিতাঃ সমাধান কোন পথে—অধ্যক্ষ এম ইব্রাহীম আখতারী

ইসরায়েল-ফিলিস্তিন অঞ্চলে বিগত প্রায় ৭ দশক ধরে চলছে যুদ্ধ যুদ্ধ খেলা। যুগ যুগ ধরে থেমে থেমে চলা দ্বন্দ্ব-সংঘাতে প্রাণ সংহার ঘটেছে অসংখ্য-অগণিত ফিলিস্তিনি মুসলমানের। যার অশুভ শিকারে পরিণত হয়ে এযাবতকাল পর্যন্ত উদ্বাস্তু হয়েছে বে-হিসাব অগণন ফিলিস্তিনি। তথাপি দু’দেশের মধ্যকার সম্পর্কের কোনরূপ ইতিবাচক পরিবর্তন তো ঘটেইনি,বরং পারস্পরিক টানাপোড়েন ক্রমাগত বেড়েই চলেছে। যতই সময় অতিবাহিত হচ্ছে, ততই পরস্পরের মধ্যে সৃষ্টি করছে অবাঞ্ছিত অবিশ্বাসের ধুম্রজাল। ফলতঃ উভয়েই সংঘাত-সহিংসতায় জড়িয়ে পড়ছে কদর্যভাবে। আর ক্রমশঃ সমাধানের পথও হয়ে পড়ছে কণ্টকাকীর্ণ। উল্লেখ্য, গত ৬ এপ্রিল’ ২৩ মসজিদুল আকসায় বর্বর ইসরাইলী বাহিনী কর্তৃক নিরীহ-নিরস্ত্র রোজাদার মুসল্লীদের উপর ন্যাক্কারজনক হামলা চালানো হয়। এ প্রবন্ধটি লিখার আগ পর্যন্ত ফিলিস্তিনিদের উপর দফায় দফায় বর্বরোচিত হামলা অব্যাহত রাখে ইসরাইল। এযাবত নারী-শিশুসহ প্রায় ৪০ জন ফিলিস্তিনিকে হত্যা করে। অপ্রিয় হলেও সত্য যে, পবিত্র রমজানের পদধ্বনি শুনা মাত্রই পাগলা কুকুরের ন্যায় বেপরোয়া হয়ে উঠে ইসরাইলি বাহিনী। যা তাদের রুটিন ওয়ার্কই বলা যায়। কেননা প্রতি বছর মৌলিক নাগরিক বিধি, আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইন ও চুক্তি লঙ্ঘন করে আল আকসায় এধরণের ন্যাক্কারজনক হামলার অবতারণা করে ইহুদিরা মুসলিম বিদ্বেষী কদর্য মনোবৃত্তিরই বহিঃপ্রকাশ ঘটায়। অনস্বীকার্য বাস্তবতা হলো – বিশ্ব অঙ্গনে ফিলিস্তিনিরা হচ্ছে ভাগ্যবিড়ম্বিত একটি জাতি। যাঁরা ছিল অটোমান সাম্রাজ্যেের অধীনস্থ। প্রথম বিশ্বযুদ্ধে পরাজয়ের পর উসমানীয় সম্রাজ্যের শাসনে থাকা মধ্যপ্রাচ্যের ভূখণ্ড ফিলিস্তিন চলে যায় ব্রিটিশদের শাসনে।অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক হলেও সত্য যে, ভূমিজসন্তান হয়েও ফিলিস্তিনিরা প্রায় শতবর্ষ কাল ধরে ভূঁইফোড় ইহুদী দখলদার বাহিনীর নিকট মার খাচ্ছে প্রতিনিয়ত। যেথায় রক্ত ঝরছে প্রজন্মের পর প্রজন্ম। অথচ আরব মুসলমানরাই ছিল অবিভক্ত ফিলিস্তিনের সংখ্যাগরিষ্ট জনগোষ্ঠী। ১৯ শতকের শেষদিকে ইহুদীদের দৃষ্টি নিবদ্ধ হয় আরব ভূখণ্ডের উপর। আর ১৯১৭ সালের বেলফোর ঘোষণার ভিত্তিতে ১৯৪৮ সালে মধ্যপ্রাচ্যের ফিলিস্তিন ভূমিতে প্রতিষ্ঠিত হয় ইসরাইল নামক ইহুদি রাষ্ট্র। আজ থেকে শত বছর পূর্বে ১৯১৭ সালের ২ নভেম্বর মাত্র ৬৭ শব্দের একটি পত্র লিখেন- বৃটিশ পররাষ্ট্র সচিব লর্ড আর্থার বেলফোর। যেটি কালক্রমে বেলফোর ঘোষনা নামে পরিচিতি লাভ করে। যা মধ্যপ্রাচ্য তথা তাবৎ দুনিয়ার জন্য গলার কাঁটায় পরিণত হয়। পত্রটি লিখেছিলেন জায়ানবাদী নেতা ব্যারন রথচাইল্ডকে। এতে উল্লিখিত হয়- ফিলিস্তিনে ইহুদি জনগোষ্ঠীর জন্য বৃটিশ সরকার একটি আবাসভূমি গড়ে তুলতে চায়। আর যেজন্য সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালানো হবে। পত্রটিতে দ্ব্যর্থহীনভাবে এটিও উল্লেখ করা হয় যে, যেথায় এমন কোন অযাচিত বিষয়ের অবতারণা করা যাবে না, যাতে ফিলিস্তিনে বিদ্যমান অ-ইহুদি সম্প্রদায়ের নাগরিক ও ধর্মীয় অধিকার কিংবা রাজনৈতিক অবস্থান ভুলুন্ঠিত হয়। অতঃপর বেলফোর ঘোষনাকে প্রতিপাদ্য করে ১৯৪৮ সালে ফিলিস্তিন ভূখণ্ডে প্রতিষ্ঠা করা হয় ইহুদিবাদী রাষ্ট্র ইসরাইল। স্মর্তব্য যে, বেলফোর ঘোষণাকালীন সময়ে ফিলিস্তিনে কেবল ৭ শতাংশ ইহুদি জনগোষ্ঠীর অস্থিত্ব বিদ্যমান ছিল। অবশিষ্ট ৯৩ শতাংশই ছিল আরব মুসলিমদের আবাস। তৎপরবর্তীতে দৃশ্যমান হলো ইউরোপীয় ইহুদিরা দলে দলে পাড়ি জমাতে থাকে ফিলিস্তিনে। আর প্রারম্ভিক পর্যায় থেকে ইহুদিরা হায়েনার ন্যায় হামলে পড়ে ফিলিস্তিনিদের উপর। শুরু করে দেয় ফিলিস্তিনিদের স্বীয় পৈতৃক বসতভিটা থেকে ন্যাক্কারজনক উচ্ছেদ অভিযান। অব্যাহত রাখে লুটপাট, ধর্ষণ, খুন এর মতো ইত্যাকার গর্হিত কর্মকাণ্ড। ফলশ্রুতিতে লক্ষ লক্ষ ফিলিস্তিনিরা হয়ে পড়ে উদ্বাস্তু-শরণার্থী। আর নগন্য সংখ্যক ফিলিস্তিনি যারা ছিল তারা স্বীয় ভূমিতে অবতীর্ণ হয় প্রবাসীর ভূমিকায়। যাইহোক, প্রতিষ্ঠার প্রায় দু’ দশক পর বেজে উঠে ২য় বিশ্বযুদ্ধের দামামা। যুদ্ধ পরবর্তী ব্রিটিশরা ফিলিস্তিন ত্যাগের পূর্বে জাতিসংঘ কর্তৃক গোটা ভূখণ্ডকে ভাগ করে ইহুদিদের জন্য ৫৬ শতাংশ এবং মুসলিমদের জন্য ৪৪ শতাংশ পৃথক দুটি স্বাধীন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার প্রস্তাব দেয়। পাশাপাশি জেরুজালেমকে যেহেতু উভয় জনগোষ্ঠী স্ব স্ব রাজধানী দাবি করে, তাই এটিকে একটি “আন্তর্জাতিক শহর” এর মর্যাদায় ভূষিত করার প্রস্তাব উত্থাপন করে। এ প্রস্তাবনা ইহুদিরা মেনে নিলেও কিন্তু মুসলমানরা এটিকে অসম প্রস্তাবনা আখ্যায়িত করে এর বিরুদ্ধে প্রতিবাদ অব্যাহত রাখে। এছাড়া ১৯৪৮ সালে জাতিসংঘ কর্তৃক এতদসংক্রান্ত সর্বসম্মতভাবে গৃহীত ১৮১ নং প্রস্তাবে উল্লিখিত হয়- বৃটিশ ম্যাণ্ডেট করা ২০ হাজার ৭৭০ বর্গ কিলোমিটার আয়তন বিশিষ্ট ফিলিস্তিনকে সমভাবে দু’ভাগে ভাগ করে ফিলিস্তিন ও ইসরাইল নামক পৃথক দু’টি স্বাধীন রাষ্ট্র গঠিত হবে। কিন্তু অত্যন্ত দূঃখজনক হলেও সত্য যে, বৃটিশের নেপথ্য পৃষ্টপোষকতায় যথাসময়ে ইসরাইল রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠিত হয়। অথচ ৭৩ বছর অতিক্রান্ত হতে চললেও অদ্যাবধি ফিলিস্তিন রাষ্ট্র গঠিত হয়নি। বরঞ্চ ইহুদিদের গণহত্যার মুখে প্রায় ৭ লাখেরও অধিক ফিলিস্তিনি ভূমিজ সন্তান ভিটে-বাড়ী ত্যাগ করে নিকটস্থ আরব দেশসমূহতে পালিয়ে গিয়ে শরণার্থী হয়। ইহুদিরা দখলে নেয় ফিলিস্তিনিদের সহায়-সম্পদ। অপ্রিয় হলেও সত্য যে, বিতাড়িত এসব ফিলিস্তিনির সংখ্যা বর্তমানে প্রয় ৭০ লক্ষ অতিক্রম করেছে বলে জানা যায়। এতদসংক্রান্ত জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে ১৯৪ নং প্রস্তাবনার আলোকে বিতাড়িতদের মধ্যে যারা ফেরত আসতে চায়, তাদের আসার সুযোগ দেয়াসহ যারা ফিরতে চায় না তাদের ক্ষতিপূরণ দেয়ার মতো আইন প্রণীত হলেও তা এখনও ফাইল চাপা পড়ে আছে। অতঃপর এসবের কোনরূপ কিনারা না করেই ব্রিটিশরা ফিলিস্তিন ত্যাগ করে। আর এরই সুবাদে সর্বপ্রকার বিধি-নিষেধ উপেক্ষা করে ইসরাইল স্বাধীনতা ঘোষণা করে বসে। শুরু হয় আরব বনাম ইসরাইলের প্রাথমিক যুদ্ধ। পার্শ্ববর্তী দেশ মিশর, জর্ডান, ইরাক ও সিরিয়া কর্তৃক হামলা চালানো হয় ইসরাইলে। এ যুদ্ধকালীন সময়ে ফিলিস্তিনের দুই তৃতীয়াংশেরও অধিক ভূমি করায়ত্ব করে ইসরাইল। আর অবশিষ্ট ভূমি ভাগাভাগি করে নেয় মিসর ও জর্ডান। পশ্চিম তীর ও পূর্ব জেরুজালেম এর নিয়ন্ত্রণ চলে যায় জর্ডান এর নিকট এবং গাজা চলে যায় মিশরের নিয়ন্ত্রণে। এরপর ১৯৬৭ সালে সংঘটিত হয় অপর একটি যুদ্ধ। যেটির মেয়াদকাল ছিল ৬ দিন। ১৯৬৭ সালের ৫ জুন থেকে ১০ জুন অবধি চলা এ ৬ দিনের যুদ্ধে জর্ডানের নিয়ন্ত্রণে থাকা জেরুজালেমসহ পশ্চিম তীর এবং মিশর নিয়ন্ত্রিত গাজা স্ট্রিপ এর ৬ হাজার ২০ বর্গ কিলোমিটার জায়গা দখলে নেয় ইসরাইল। এতদপ্রেক্ষিতে ১৯৬৭ সালের নভেম্বরে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদ একটি প্রস্তাবনা পাশ করে। ২৪২ নং এ প্রস্তাবনায় উল্লিখিত হয়- এ সংক্ষিপ্ত যুদ্ধে ইসরাইল যেসব এলাকা দখল করেছে এসবের শর্তহীন দখল ত্যাগ করতে হবে। অথচ বিষ্ময়কর বিষয় হলো, এর ৫৭ বছর অতিক্রান্ত হলেও এটির প্রতি ইসরাইল অদ্যাবধি কোনরূপ ভ্রুক্ষেপই করে নি। অতঃপর ১৯৭৮ সালে মিসর- ইসরাইল মধ্যকার ক্যাম্প-ডেভিড নামক একটি চুক্তি স্বাক্ষরিত হওয়ার পর জাতিসংঘ আরেকটি প্রস্তাবনা পাস করে। ৪৪৬ নং এ প্রস্তাবনায়ও উল্লিখিত হয়- ১৯৬৭ সালে সংঘটিত সংক্ষিপ্ত যুদ্ধে অধিকৃত এলাকা ছেড়ে দেয়াসহ পশ্চিম তীরে ইহুদি পূনর্বাসন বন্ধ করতে হবে। তাও এ যাবতকাল পর্যন্ত আমলে নেয় নি ইসরাইল। পরবর্তীতে ১৯৮০ সালে জাতিসংঘ আবারও একটি প্রস্তাবনা পাস করে। ৪৬৫ নং এ প্রস্তাবনায় উল্লিখিত ছিল- জেরুজালেমসহ পশ্চিম তীরে ইহুদিদের বসতি সম্পূর্ণ ভেঙ্গে ফেলতে হবে। এতে কোনপ্রকার কর্ণপাত তো করেইনি, বরং তথায় ইহুদি পূনর্বাসন প্রক্রিয়া পূর্ণমাত্রায় বহাল রাখে ইসরাইল। যাইহোক, ১৯৯৩ সালে যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় ইসরায়েল ও ফিলিস্তিনি মুক্তি সংস্থা (পিএলও) এর মধ্যকার অসলো নামক একটি শান্তি চুক্তি সম্পাদিত হয়। যেটির আলোকে ১৯৯৬ সালে ইসরাইল কর্তৃক পশ্চিম তীর ও গাজায় স্বায়ত্তশাসনের নিমিত্তে ফিলিস্তিনিদের নিকট হস্তান্তর করা হলেও প্রকৃতপক্ষে তার কোন ইতিবাচক কার্যকারিতা পাইনি। কারণ পূর্ব থেকেই ইহুদিরা অবৈধ বসতি স্থাপনের মাধ্যমে এসব এলাকা তাদের ঘাঁটিতে পরিণত করে। যা ইহুদি অধ্যুষিত অঞ্চলে পরিণত ছিল। আর ফিলিস্তিনিরা ছিল সংখ্যালঘুর ন্যায়। যেথায় চতুর্দিকে সীমানা প্রাচীর নির্মাণ, যাতায়াতে বিবিধ অযাচিত বিধি-নিষেধ আরোপসহ রকমারি অবাঞ্ছিত বিদ্বেষ-বৈষম্য ও নিপীড়নের শিকারে পরিণত হয়ে জীবনযাপনে প্রতিনিয়ত এাহি অবস্থা ফেইস করতে হতো তথাকার ফিলিস্তিনি জনগণের। অতঃপর পর্যায়িক্রমিকভাবে ফিলিস্তিনিদের নিজ ভূমি থেকে জোরপূর্বক বিতাড়িত করে প্রায় গোটা অঞ্চলই অবৈধভাবে দখলে নেয় ইসরাইল। আর জাতিসংঘের গৃহীত বিবিধ প্রস্তাবনা ও আন্তর্জাতিক বিধি-নিষেধকে উপেক্ষা করে ৭৩ বছর যাবত ফিলিস্তিনি মুসলমাদের উপর অব্যাহত রাখে হামলা, খুন নিপিড়ন – নির্যাতন। যার মাধ্যমে গোটা আরব বিশ্বে এক অস্থির রাজনীতির জন্ম দেয় ইসরাইল। উল্লেখ্য যে, ফিলিস্তিনিরা যুগ পরম্পরায় এ ভূখণ্ডকে তাদের দেশ, নিজস্ব ভূমি হিসেবে জেনে আসছে। এছাড়া এ ভূখণ্ডে রয়েছে মুসলমানদের ঐতিহাসিক তীর্থস্থান জেরুজালেমের পুরনো শহরে অবস্থিত মসজিদুল আকসা বা বাইতুল মুকাদ্দাস। যেটি ইসলামের তৃতীয় পবিত্রতম মসজিদ। যেটির সাথে একই প্রাঙ্গণে কুব্বাত আস সাখরা, কুব্বাত আস সিলসিলা ও কুব্বাত আন নবী নামক স্থাপনাগুলো অবস্থিত। এই পুরো স্থানটিকে হারাম আল শরিফ বলা হয়। প্রিয়নবী হযরত মুহাম্মদ (দ.) মিরাজের রাতে মসজিদুল হারাম থেকে আল আকসা মসজিদে এসেছিলেন এবং উক্ত স্থান থেকে তিনি উর্ধ্বাকাশের দিকে যাত্রা করেছিলেন স্রষ্টা সকাশে। উপরন্তু এটি মুসলিমদের প্রথম কিবলা হিসেবেই পরিচিত। ফলে ভূঁইফোড় ইহুদিদের নিকট কোনোভাবেই তারা নতি স্বীকার করতে চায় না। আর মুসলিম উম্মাহর এ কীর্তিমান তীর্থস্থানটির সুরক্ষায় যুগ যুগ ধরে রক্ত ঝরাচ্ছে ফিলিস্তিনি মুসলমানরা। অপরদিকে ইহুদি ধর্মগ্রন্থের প্রথম খন্ড “ওল্ড টেস্টামেন্ট” (তানাখ) অনুসারে, বর্তমান ইসরায়েল-ফিলিস্তিন ভূখণ্ড হলো ইহুদিদের “প্রমিজড ল্যান্ড”। যেটি উদ্ধারে মরিয়া হয়ে উঠে ইসরাইলিরা। যেজন্য বরাবরই ইসরাইলী ইহুদীরা সহিংসতার সূত্রপাত ঘটায়। আর এখান থেকেই ইসরাইল-ফিলিস্তিন এর মধ্যকার রাজনৈতিক দ্বন্দ্ব ও সশস্ত্র সংঘাতের সূচনা বলে মনে করেন আন্তর্জাতিক রাজনীতি বিশেষজ্ঞ মহল। যাইহোক, ইসরাইল-ফিলিস্তিন এর মধ্যকার এ সমস্যার একটি টেকসই সমাধান বিশ্ববাসীর নিকট অধিকতর প্রত্যাশিত হলেও এ যাবত তা হয়নি। এক্ষেত্রে উভয়ের মধ্যকার পারস্পরিক অনাস্থা, ইসরাইলের দখলদারিত্বের মতো নেতিবাচক মনোবৃত্তি, অন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের উদাসীনতা, পার্শবর্তী মুসলিম রাষ্ট্রসমূহের নামমাত্র প্রতিবাদ ও পদলেহী চরিত্র তথা পশ্চিমাদের কর্তৃক ইসরাইলকে অর্থ- অস্ত্র সহযোগিতার মতো বিষয়াদি এ অঞ্চলে শান্তি প্রতিষ্ঠার অন্তরায় বলে মনে করেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞ মহল। তবে এ সমস্যার আশু সমাধানে বিশ্ব নেতাদের এক চোখা নীতির পরিবর্তন ঘটানো আবশ্যক। উপরন্তু সম্পূর্ণ নিরপেক্ষ দৃষ্টি প্রদর্শন করতঃ সকলের ঐকমত্যের ভিত্তিতেই একটি টেকসই ও স্থায়ী সমাধানের পথে এগুতে হবে। আর এক্ষেত্রে যদি কোনরূপ ব্যত্যয় ঘটে, তাহলে আরবভূমিতে অবস্থিত পবিত্র মক্কা-মদিনার দিকেও এ অপশক্তি আঙ্গুল তুললে অবাক হওয়ার কিছুই থাকবে না।

কলামিস্ট অধ্যক্ষ এম ইব্রাহিম আখতারী
সূত্র: দৈনিক পূর্বকোণ পত্রিকা (১৯ মে ২০২৩ইং)

[related_post themes="flat" id="1953"]